চিজ দিয়ে চিজকেক! | Le Delicia

চিজ দিয়ে চিজকেক!

“কেক” যেকোনো গেট টুগেদার থেকে শুরু করে সব ধরনের অনুষ্ঠানকে আরও জমকালো ও আনন্দায়ক করে তুলে। সাধারণত আমাদের একেকজনের একেক ধরনের বা ফ্লেভারের  কেক পছন্দ। জনপ্রিয় কেকগুলোর মধ্যে অন্যতম হল চিজকেক। পশ্চিমা জগতের একটা জনপ্রিয় ডেজার্ট “চিজকেক”। আমরা বাঙালিরাও এই চিজকেকের বেশ ভক্ত হয়ে গিয়েছি।

 

চিজকেক না পাই!

চিজকেক যদিও সত্যি বলতে ঠিক কেক নয় তবুও একে কেক হিসেবেই ধরা হয়। বর্তমান চিজকেক আদৌ কেক কি না তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। চিজকেক অনেকটা ফ্ল্যানের মতো, আবার কাস্টার্ড ভরাট এবং পাশে ও নীচে ক্রাস্ট দিয়ে তৈরী চিজকেককে পাই এর মতো দেখায়।

চিজকেকে “কেক” এর মত ময়দার খামির,বেকিং সোডা বা পাউডার ব্যবহার বা বেক করার মতো কিছুই করা হয় না। চিজকেকে সাধারনত উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় পনির, চিনি, মাখন, ভ্যানিলা এবং একটি গ্রাহাম ক্র্যাকার ক্রাস্ট। এছাড়া রিকোটা, ক্রিম পনির , বা Neufchatel (একটি ক্রিমি ফ্রেঞ্চ পনির) মত পনির দিয়ে তৈরি করা হয়। 

প্রাচীন গ্রিসের যুগে বেকড পনির, ময়দা এবং মধু দিয়ে চিজকেক তৈরি করা হত । প্রাচীন রোমানদেরও একই ধরনের রেসিপি ছিল এবং তারা একে “Placenta or libum” বলে।


চিজকেকের প্রবর্তনকথা 

চিজকেক নিয়ে নানান বিতর্ক তো দেখলাম তাহলে এবার জেনে নিই এই কেকের আবির্ভাব কোথা থেকে হলো। নৃতাত্ত্বিকদের মতে পনির তৈরির ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চিজকেক খুঁজে পাওয়া যায়, তবে প্রাচীন গ্রীসে উদ্ভূত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, ৭৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অনুষ্ঠিত প্রথম অলিম্পিক গেমসের সময় ক্রীড়াবিদদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য চিজকেকের একটি ফর্ম পরিবেশন করা হয়েছিল। সেই যুগের গ্রীক বধূরাও তাদের বিয়ের অতিথিদের জন্য চিজকেক পরিবেশন করত। “দ্য অক্সফোর্ড কম্প্যানিয়ন টু ফুড”-এর সম্পাদক অ্যালান ডেভিডসন উল্লেখ করেছেন যে মার্কাস পোরসিয়াস “ক্যাটো’স দে রে রাস্টিকা”-এ চিজকেক এর বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল যে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি ক্যাটো বর্ণনা করেন যে চিজ দিয়ে লিবাম (কেক) তৈরি করা হয়েছে, যা ছিল আধুনিক চিজকেকের মতোই। রোমানরা গ্রীস থেকে চিজকেকের ঐতিহ্য ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে দেয়। কয়েক শতাব্দী পরে, চিজকেক আমেরিকায় আবির্ভূত হয়েছিল, অভিবাসীদের দ্বারা আনা বিভিন্ন আঞ্চলিক রেসিপি সহ।

চিজকেকের রকমফের

দুটি ভিন্ন ধরণের চিজকেক রয়েছে: বেকড এবং নন বেকড/ঠাণ্ডা। বেকড চিজকেকের মধ্যেও দুটি ভিন্ন রেসিপি রয়েছে, একটি হল এশিয়ান যাতে বাটারে ডিমের সাদা অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং অন্যটি আমেরিকান রেসিপি। 

বেশির ভাগ বেকড চিজকেক দুধ, ডিম, চিনি, লবণ এবং ভ্যানিলা বা অন্যান্য স্বাদে ভরার জন্য কাস্টার্ড বেস ব্যবহার করে। স্ট্যান্ডার্ড চিজকেক রেসিপিতে ক্রিম চিজ দিয়ে, ক্রাস্টে অন্যান্য স্বাদ বাড়ানোর জন্য চকলেট এবং বিভিন্ন টপিংস যা ফল থেকে বাদাম থেকে মিছরি পর্যন্ত ব্যবহার করে। 

রীক চিজকেকঃ 

অধিকাংশ “ঐতিহ্যগত” গ্রীক চিজকেক ‘রিকোটা চিজ’ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। তবে, আসল চিজকেকের রেসিপি অনুযায়ী এতে, খাঁটি আনসল্টেড অ্যান্থোটাইরোস বা মিজিথ্রা চিজ ব্যবহার করা হয়  যা ছাগল বা ভেড়ার দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। গ্রীক চিজকেক সাধারণত মধু দিয়ে মিষ্টি করা হয়। কিছু রেসিপি বেক করার আগে চিজ/মধুর মিশ্রণে সরাসরি ময়দা যুক্ত করে, অন্যরা একটি ক্রাস্ট ব্যবহার করে।

ক্রিম চিজ চিজকেকঃ 

অধিকাংশ আমেরিকানরা যে চিজকেকের সাথে বড় হয়েছে তা হল ক্রিম চিজ, চিজকেকের এক বা অনন্য রেসিপি । আমেরিকানরা যখন চিজকেকের কথা চিন্তা করে, তখন এর ক্রিম চিজ বেস দেয়া হয়। ১৮৭২ সালে ক্রিম চিজ নিউইয়র্কের চেস্টারের আমেরিকান ডেইরিম্যান উইলিয়াম লরেন্স দ্বারা আবিষ্কৃত হয়েছিল। জেমস এল. ক্রাফ্ট ১৯১২ সালে পাস্তুরিত পনির উদ্ভাবন করেন, যা পাস্তুরিত ফিলাডেলফিয়া ব্র্যান্ডের ক্রিম চিজের বিকাশ ঘটায়, যা বর্তমানে চিজকেক তৈরিতে ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় চিজ । ক্রাফ্ট ফুডস আজও ফিলাডেলফিয়া ক্রিম চিজের মালিক এবং উৎপাদন করে।

এই ধরনের চিজকেকের নীচে,সাধারণত গ্রাস করা গ্রাহাম ক্র্যাকার বা অন্যান্য কুকিজ (ওরিও চকোলেট চিজকেকের জন্য একটি শীর্ষ পছন্দ) ক্রাস্ট তৈরী করা হয় ,যা মাখনের সাথে মিশ্রিত করে প্যান বা ছাঁচের নিচে টেম্প করা হয়। একটি কাস্টার্ড বেস উপর নির্ভর করে যে চিজকেক বেক করা হয়। 

নিউ ইয়র্ক বেকড চিজকেকঃ 

বেকড চিজকেকের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি চিজকেক হচ্ছে এই নিউ ইয়র্ক বেকড চিজকেক। রেগুলার চিজকেকে যেখানে হেভি ক্রিম এবং টক ক্রিম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই চিজকেকে সেখানে হেভি চিজ ক্রিম ব্যবহার করা হয় ফলে একটি রিচ, ঘন ক্রিমি টেক্সচার তৈরি হয়। 

তবে, এর বাইরেও এমন কিছু রেসিপি রয়েছে যেখানে অন্যান্য সমৃদ্ধ উপাদান এর  মিশ্রণ ব্যবহার করা হয় – যেমন টক ক্রিম, গ্রীক দই বা ভারী ক্রিম – যা একটি “নন বেকড চিজকেক” তৈরি করতে রেফ্রিজারেটরে রেখে শক্ত করা হয় ।

চিজকেক নিয়ে কিছু মজার তথ্যঃ 

  • চিজকেক সম্পর্কে একটি খুবই প্রচলিত ভুল ধারণা হল এটি মিষ্টি হতে হবে! ফরাসি ক্লাসিক, কুইচ, বলেন এর  উদ্দেশ্যই হল সুস্বাদু চিজকেক।  ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে এধরনের সুস্বাদু চিজ পাই রেসিপি খুঁজে পাওয়া  যায়।
  • রেগুলার ভ্যানিলা বা চকলেট ফ্লেভারের পাশাপাশি পাম্পকিন ও লেমন ফ্লেভারের চিজকেক ও ভীষণ জনপ্রিয়। 
  • চিজকেক ওভেনেও বেক করা হয় আবার রেফ্রিজারেট ও করা হয়।
  • গিনিজ বুক অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে দামী চিজকেক তৈরি করা হয়েছিলো ম্যানহাটনের র‍্যাফেল রিস্ট্রোনাতে। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিলো ৫ দিন এবং খরচ হয়েছিলো প্রায় ৫০০০ ইউ এস ডলার।
  • এখন পর্যন্ত তৈরি সবচেয়ে বড় চিজকেকের ওজন ৪৭০৩ পাউন্ড। ২৫ জানুয়ারি ২০০৯, মেক্সিকোতে এই কেক তৈরি করা হয়েছিলো। 
  • ফিলিপিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিজকেক হচ্ছে উবে চিজকেক যেটি দেখতে পার্পল রঙের।  

তো আপনিও যদি এই অসাধারণ চিজকেকের স্বাদ চেখে দেখতে চান তো এক্ষুনি অর্ডার করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে কিংবা চলে আসতে পারেন আমাদের Le Delicia আউটলেটেও

`
  • No products in the cart.